সর্বশেষ সংবাদ
Freelance
প্রকাশিত: 08:22:45 pm, 2023-06-04 | দেখা হয়েছে: 12 বার।
আমিরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার ::মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের শেরপুর অঞ্চলের অন্যতম সদস্য জননেতা ভাষা সৈনিক আব্দুর রশীদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৫ জুন (সোমবার)।
মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলেক্ষে ভাষা সৈনিকের পরিবারের পক্ষ থেকে নেয়া কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সোমবার সকালে শেরপুর টাউনের শেখহাটি মহল্লায় ভাষা সৈনিক আব্দুর রশীদ কুটিরে প্রয়াত ভাষা সৈনিকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, চাপাতলী পৌর কবরাস্থানে কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং কবর জিয়ারত। এছাড়া কোরআন খানী ও প্রয়াত এই ভাষা সৈনিকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিভিন্ন জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
আব্দুর রশীদ ১৯৩১ সালের ২৫ জানুয়ারি শেরপুর পৌর টাউনের শেখহাটি মহল্লায় এক সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী ভিক্টোরিয়া একাডেমীতে অধ্যয়নকালে ছাত্রাবস্থায় তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট, ৬২’র শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যূত্থান, ৭০’র নির্বাচন,৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে অবদান রাখেন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি কারারুদ্ধ হন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হলে এর প্রতিবাদ করায় তৎকালীন সরকার তাকে ময়মনসিংহ জেলা কারাগারে বিনা বিচারে ৯ মাস কারারুদ্ধ করে রাখেন। আজীবন সংগ্রামী সাবেক ন্যাপ নেতা আব্দুর রশীদ তার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল (অবঃ) আতাউল গণি ওসমানী, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ ও বিপ্লবী রবি নিয়োগী সহ দেশ বরেন্দ্র বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের সান্নিধ্যলাভ করেন।
তিনি সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর বাকশালের শেরপুর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রবক্তা আব্দুর রশীদ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর, আল সামস ও জামায়াত-শিবির এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। বিশেষ করে শেরপুরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির দন্ড কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদাই প্রতিবাদী ছিলেন। কামারুজ্জামানকে সামাজিকভাবে বয়কট করে শেরপুরে এক অন্যন্য নজির স্থাপন করেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি শেরপুর জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
তিনি ৮৪ বছর বয়সে বার্ধক্য জনিত কারণে ২০১৪ সালের ৫ জুন রাত সাড়ে তিনটায় শেরপুর টাউনের গৃদানারায়নপুরের নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দৈনিক যুগান্তর, এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজ ও বিডি নিউজ২৪ ডটকম এর শেরপুর জেলা প্রতিনিধি মো. আব্দুর রহিম বাদলের পিতা।