সর্বশেষ সংবাদ
Freelance
প্রকাশিত: 01:07:24 pm, 2021-07-31 | দেখা হয়েছে: 16 বার।
প্রতিনিধিঃ ইতালী প্রবাসী প্রয়াত নুরুল হক ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে মরনব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ইতালীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ইতালীতে তার কাছের কোন আত্মীয় স্বজন না থাকায় দীর্ঘদিন তার মৃতদেহ হাসপাতালের মর্গে পরে থাকে একপর্যায়ে হাসপাতাল কতৃপক্ষ এবং নুরুল হকের গ্রামের ইতালী প্রবাসী জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক বকুল চক্রবর্তী জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর সভাপতি অলিউদ্দিন শামীম এর সাথে যোগাযোগ করলে শামীম লাশ গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য নুরুল হকের দেশের বাড়ি বৃহত্তর সিলেট মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলায়। তারপর জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর পক্ষ থেকে এসোসিয়েশনের নিজ খরচে লাশ দেশে পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করলে দেশে যোগাযোগ শুরু করেন সভাপতি শামীম। নুরুল হকের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার স্ত্রী রুবিনা আক্তার লাশ গ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন বলে জানান শামীম। তারপর জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর পক্ষ থেকে ২ লক্ষ ৭০হাজার টাকা খরচ বহন করে লাশ দেশে পাঠানো হয় সাথে দেশে দাফন সম্পন্ন করতে আরো ৩০ হাজার টাকা নগদ প্রেরন করেন শামীম অর্থাত সর্ব মোট ৩ লক্ষ টাকা জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর পক্ষ থেকে খরচ করে বাংলাদেশে মৃত্যু নুরুল হকের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়।
তারপর পর সভাপতি শামীম ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক বকুল চক্রবর্তীকে সাথে নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যান ইতালী প্রবাসী প্রয়াত নুরুল হক কোথায় থাকতেন কোথায় কাজ করতেন কিন্তু সব চেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় নুরুল হক ইতালীতে বৈধ ভাবে বসবাস করতেন কিন্তু তার মৃত্যুর পর হাসপাতাল থেকে সাথে থাকা ছোট একটা ব্যাগের মধ্যে শুধু মাত্র তার আইডি কার্ড ও একটা ব্যাংক কার্ড ব্যতীত আর কিছু পাওয়া যায় নি। কিন্তু সভাপতি অলিউদ্দিন শামীম নাছোড়বান্দা উনি হাল ছাড়েনি একপর্যায়ে নুরুল হকের কর্মস্থল খোঁজে বের করেন এবং মালিক পক্ষকে বিস্তারিত বলেন। তারপর দীর্ঘ আইনি লড়াই করে ৯ হাজার ২ শত ইউরো বাংলাদেশী টাকায় ৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আদায় করতে সক্ষম হন। এর থেকে জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর ৩ লক্ষ টাকা ও আইনজীবীর ১ লক্ষ ২০হাজার টাকা খরচ রেখে প্রায় ৫ লক্ষ কিছু টাকা মৃত্য নুরুল হকের স্ত্রী রুবিনা আক্তারের কাছে হস্তান্তর করেন নিজ হাতে। এরপর শুরু করেন ব্যাংকের তালাশ ব্যাংকে জমা টাকা আছে কি না এবং ব্যাংকের কোন শাখায় নুরুল হকের সঞ্চয়ী হিসাব এইটা কিন্তু এত সহজ ছিল না অনেক খোঁজাখুঁজির পর ব্যাংক নির্ণয় করতে সক্ষম হন। তারপর জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর নিজ খরচে চলে আইনি লড়াই এজন্য সভাপতি শামীম ৩ বার ঢাকা সফর করতে হয়েছে ঢাকায় অবস্থিত ইতালিয়ান দূতাবাসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যবস্থা করতে কিন্তু এত কিছুর পরও ব্যাংক কতৃপক্ষ সকল সঠিক কাগজপত্র দেওয়া স্বত্বেও জমা কৃত টাকা আছে কি না জানাতে বা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এজন্য ৩ জন আইনজীবী পরির্বতন ও ইতালীর ৩ টি আদালত পরির্বতন করতে হয়। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ বছরের অধিক সময় আইনি লড়াই শেষে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ব্যাংক টাকা দিতে বা হিসেব দিতে বাধ্য হয়। নুরুল হকের জমা কৃত ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাবে পাওয়া যায় ৪৩ হাজার ইউরো যা বাংলাদেশী টাকায় ৪৩ লক্ষ টাকা মতো। এর থেকে আইনজীবী ১৩ লক্ষ টাকা এবং জালালাবাদএসোসিয়েশন ইতালীর খরচ বাবত ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা রেখে বাকি ২৫ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা ইতালী প্রবাসী মৃত্য নুরুল হকের স্ত্রী রুবিনা আক্তারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এছাড়া ও প্রায় ৭ বছর পূর্বে একি রকম আরেক ইতালী প্রবাসী সিলেটের কানাইঘাট থানায় অধিবাসী ইতালীতে মৃত্যু বরন করেন তখন ও আইনি লড়াই চালিয়ে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা তার পরিবার স্ত্রী সন্তানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরকম অসংখ্য উদাহরণ আছে জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর মানবতার কল্যাণে কাজ করার অতীত বর্তমানের ন্যায় ভবিষ্যতে ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালী সব সময় মানবতা ও অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবে বলে জানান জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর সভাপতি অলিউদ্দিন শামীম।